ঢাকা,শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪

ই’তেকাফের বর্ণনা, গুরুত্ব ও ফজিলত

ই’তেকাফের বর্ণনা, গুরুত্ব ও ফজিলত

=====================

মাওলানা মোহাম্মদ ইউনুছ আরমান

মহান আল্লাহ তা’য়ালা মানবজাতিকে পৃথিবীতে প্রেরণ করেছেন স্বীয় খলিফা হিসেবে। আর মানবজাতিকে পবিত্র জান্নাতের মাধ্যমে ক্রয় করে নিয়েছেন। সুতরাং, এই মানুষ খলিফা হিসেবে আল্লাহ্‌র সব থেকে প্রিয়। সে কারণে মানুষের প্রথম ও একমাত্র উদ্দেশ্য হতে পারে সেই মহান স্রষ্টার রঙে রঙিন হওয়ার। ঝকমারী দুনিয়াদারীর কারণে বান্দাহ্‌র ক্বলবে ময়লা-আবর্জনার সমাবেশ ঘটে। এটাকে দূর করতেই প্রতিবছর আসে পবিত্র রমজান মাস। এই রমজান মাসের প্রথম দশদিন রহমত, দ্বিতীয় দশদিন মাগফিরাত এবং শেষ দশদিন নাজাত। ফলে, শেষ দশদিন বিশেষ মর্যাদাপূর্ণ। কারণ, এই দশদিনের মধ্যে রয়েছে লাইলাতুল কদর। যে রাতটি হাজার মাসের চেয়েও অতি গুরুত্বপূর্ণ। আর এ কারণে মুমিনগণ সেই কল্যাণময়ী রাতের সন্ধানে মসজিদে ই’তেকাফ করেন।

ইতিকাফের বিধান সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা :

ই’তেকাফের নিয়তে মসজিদে অবস্থান করাকে ই’তেকাফ বলে। হানাফীগণের নিকট এতেকাফ তিন প্রকার : (ক) ওয়াজিব ই’তেকাফ, যাহা কোন কাজের উপর মান্নাত করার কারণে ওয়াজিব হয়। যেমন- কেহ বলিল যে, যদি আমার অমুক কাজটি হইয়া যায়, তবে আমি এতদিন ই’তেকাফ করিব। অথবা কোন কাজের শর্ত ব্যতীত এমনিতেই এইরূপ মান্নাত করিল যে, আমি আমার উপর এতদিনের ই’তেকাফ জরুরী করিয়া নিলাম। অর্থাৎ আমি অবশ্যই এতদিন ই’তেকাফ করিব। এইভাবে বলিলেও ই’তেকাফ ওয়াজিব হইয়া যায় । এতএব, যতদিনের নিয়ত করিবে ততদিনের এতেকাফ করা জরুরী হইবে।

(খ) সুন্নত ই’তেকাফ, যাহা রমযান মাসের শেষ দশ দিনে করা হয়। হযরত নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই দিনগুলিতে ই’তেকাফ করিতেন। (গ) নফল এতেকাফ, ইহার জন্য কোন সময় বা দিনকাল নির্দিষ্ট নাই । যতক্ষণ বা যতদিন ইচ্ছা করা যাইবে এমনকি কেহ সারাজীবন ই’তেকাফের নিয়ত করিলেও জায়েয হই।

ই’তেকাফের ফজিলত :

ই’তেকাফের সওয়াব অনেক বেশী । ই’তেকাফের ফযীলত ইহার চাইতে বেশী আর কী হইবে যে, স্বয়ং নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সর্বদা ইহার এহতেমাম করিতেন । তাই, ই’তেকাফকারীর দৃষ্টান্ত হইল ঐ ব্যক্তির মত যে, কাহারও দরজায় গিয়ে আবেদন করিল, এবং সেখানে অবস্থান করিল, আর বলতে থাকল যে, আমার দরখাস্ত মন্জুর না হওয়া পর্যন্ত আমি এই দরজা থেকে ফিরে যাইবনা।

সুতরাং, ২০ রমজান সূর্যাস্ত হওয়ার আগমূহুর্ত থেকে শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা পর্যন্ত ই’তেকাফের নিয়ত করি। আল্লাহ সকলকে তাওফীক দান করুক। এবং মহামারী কোভিড-১৯ (করোনা ভাইরাস) থেকে সকলকে হেফাজত করুক। (আমীন)

পাঠকের মতামত: